জামরুল ফল খাবেন যে কারনে
জামরুল ফল খাবেন যে কারনে
জামরুল আমাদের দেশে পরিচিত একটি ফল। মৌসুমি এই ফলটি বছরের নির্দিষ্ট মৌসুমে সহজলভ্য থাকে। একটু ভিন্ন স্বাদের কারণে অনেকে জামরুল খেতে না চাইলেও এর রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। জামরুলের মৌসুমে নিয়মিত জামরুল খেলে মিলবে বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা।
চলুন জেনে নেওয়া যাক জামরুল খাওয়ার উপকারিতা। রসালো প্রকৃতির ফল জামরুলে রয়েছে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক পুষ্টি উপাদান। জামরুলে আছে প্রচুর পরিমাণে পানি, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিন এ,বি,সি এবং ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম সোডিয়াম, সালফার ইত্যাদি খনিজ উপাদান। এ ছাড়া রয়েছে ডায়াটারি ফাইবার ও প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
জামরুলের উপকারিতা
- জামরুলে থাকে বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি, যা শ্বেতকণিকা তৈরি করে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে জমে থাকা টক্সিন দূর করে।
- জামরুলে জলীয় অংশের পরিমাণই বেশি। এটি শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখে অর্থাৎ শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে।
- জামরুলে পর্যাপ্ত পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার রয়েছে। এটি হজমক্রিয়ার উন্নতি ঘটায়। কোষ্ঠকাঠিন্য, পেট ফাঁপা ও ডায়রিয়া প্রতিরোধে বিশেষভাবে কাজ করে। হজমের সমস্যা থাকলে জামরুলের মৌসুমে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় জামরুল রাখতে পারেন।
- চোখের সমস্যা প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে জামরুল। পর্যাপ্ত ভিটামিন এ থাকায় এই ফল চোখের জন্য ভীষণ উপকারী।
- জামরুল খেলে শরীরে ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্য বজায় থাকে।
- জামরুল দৈনিক ক্যালসিয়ামের চাহিদা অনেকাংশে পূরণ হতে পারে। অস্টিওপোরেসিসসহ হাড়ের বিভিন্ন সমস্যা প্রতিরোধ করে এবং হাড় মজবুত করতে ভূমিকা রাখে।
- জামরুলে আছে জাম্বোসাইন নামের একটি উপাদান। এটি শর্করাকে চিনিতে রূপান্তরিত হতে বাধা দেয় এবং আন্টিহাইপারগ্লিসেমিক নামের উপাদান গ্লুকোজের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই ডায়াবেটিস রোগীরাও এ ফলটি খেতে পারেন।
-
- জামরুল খেলে কার্ডিওভাসকুলার বিষয়ক জটিলতা হ্রাস পায়। পটাশিয়াম থাকায় এটি খেলে পেশির ব্যাথা দূর হয় এবং পেশি শক্তিশালী হয়।
- জামরুলে রয়েছে ক্যানসার প্রতিরোধের অনেক উপাদান যেমন ভিটামিন সি, ফ্ল্যাবনয়েড। তাই নিয়মিত জামরুল খেলে ক্যানসারের ঝুঁকি কমে এবং ক্যানসার প্রতিরোধ হয়।
- জামরুলে আছে নিয়াসিন, যা কোলেস্টেরল তৈরি নিয়ন্ত্রণ করে। এটি রক্তে ভালো এইচডিএল কোলেস্টেরল বাড়ায় এবং খারাপ ট্রাইগ্লিসারাইড কমায়। এইচডিএলের মাত্রা বেশি থাকায় জামরুল রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
- জামরুলের হেপাটোপ্রটেক্টিভ উপাদান লিভারের কোষ ধ্বংস থেকে রক্ষা করে লিভারের রোগ প্রতিরোধ করে।
- জামরুলের বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান জীবাণু ও ছত্রাকনাশক হিসেবে কাজ করতে পারে। জ্বর, ঠান্ডা, কাশির মতো সংক্রমণজনিত রোগ প্রতিরোধ করে। এ ছাড়া ত্বকে ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিহত করে ত্বক ভালো রাখে।
সতর্কতা
অতিরিক্ত জামরুল খেলে পেট ফাঁপা, বমি ভাব, ডায়রিয়া হতে পারে। আবার জামরুল খেলে এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে অনেকের। এসব সমস্যা দেখা দিলে জামরুল না খাওয়াই ভালো।